ইসরাইলি জিম্মি বিনিময়ে ১১০ ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি
- By Jamini Roy --
- 31 January, 2025
ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তির প্রক্রিয়ায় নতুন মোড় নিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি। ইসরাইলি বাহিনীর হাতে বন্দি থাকা ১১০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে দেশটি। তবে একই সময় পশ্চিম তীরের সিলওয়াদ শহরে অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করে তোলে নেতানিয়াহুর বাহিনী।
অভিযানের পাশাপাশি জেনিন শহরে ইসরাইলি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এক সেনার মৃত্যু হয়েছে। এদিকে, রামাল্লায় ফিলিস্তিনি বন্দিরা মুক্তি পাওয়ার পর তাদের স্বজনদের সঙ্গে আবেগঘন পুনর্মিলনের দৃশ্য দেখা গেছে। দীর্ঘ ১৫ মাস পর প্রিয়জনকে কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেকে।
ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে বন্দি বিনিময়ের ঘটনা নতুন নয়। তবে চলমান সংঘাতের প্রেক্ষাপটে এই বিনিময় বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রেডক্রসের মাধ্যমে বন্দি বিনিময়ের কাজ সম্পন্ন হয়। ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তির পর ১১০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয় ইসরাইল। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে কিশোর-যুবক থেকে শুরু করে প্রবীণ ফিলিস্তিনিরাও রয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই বিনা বিচারে আটক ছিলেন বলে অভিযোগ করেছে হামাস।
হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, "আমাদের জনগণকে মুক্ত করার সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। ইসরাইলি দখলদার বাহিনীকে বুঝতে হবে যে, ফিলিস্তিনি বন্দিদের কারাগারে আটকে রাখা সম্ভব নয়।"
বন্দি মুক্তির এই ঐতিহাসিক মুহূর্তেও ইসরাইলি বাহিনী হামলা অব্যাহত রেখেছে। যখন রামাল্লায় ফিলিস্তিনি বন্দিদের রেডক্রসের বাসে করে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছিল, তখনই পশ্চিম তীরের সিলওয়াদ শহরে অভিযান চালায় ইসরাইলি সেনারা।
এই অভিযানের সময় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। ইসরাইলি বাহিনী নির্বিচারে গুলি চালালে দুই ফিলিস্তিনি আহত হন, যাদের একজন শিশু। এছাড়া মাত্র ১৩ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি শিশুকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এর পাশাপাশি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে জেনিন শহর। সেখানে ইসরাইলি বাহিনীর অভিযানের সময় ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে তীব্র সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে ইসরাইলি সেনারা গুলি চালালে এক সেনা নিহত হয় এবং আরও কয়েকজন আহত হন।
বন্দি বিনিময়ের মধ্যেই হামাস একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছে। সংগঠনটির সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফ ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে হামাস।
হামাসের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, "ফিলিস্তিনের সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগ্রামের প্রতীক ছিলেন মোহাম্মদ দেইফ। তার নেতৃত্বেই হামাসের সামরিক শাখা শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ইসরাইল বহু বছর ধরে তাকে হত্যা করার চেষ্টা করছিল এবং অবশেষে তারা সফল হয়েছে।"
মোহাম্মদ দেইফ দীর্ঘদিন ধরে ইসরাইলের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় ছিলেন। একাধিকবার হত্যাচেষ্টার পর গেল বছরের জুলাইয়ে ইসরাইলি হামলায় তিনি মারা যান বলে হামাস নিশ্চিত করেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি স্বস্তির খবর হলেও ইসরাইলের চলমান সামরিক অভিযান পরিস্থিতিকে আরও অস্থির করে তুলতে পারে। বিশেষ করে পশ্চিম তীর ও গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর অভিযান এবং হামাসের প্রতিরোধের কারণে সহিংসতার আশঙ্কা আরও বেড়েছে।